Ratings1
Average rating4
দামু বেজায় বোকা মানুষ। কেমন বোকা? একবার কে যেন তাকে বলেছিল— দেখে এলাম, আমড়াতলায় তোর ডান কানটা পড়ে আছে। তাই শুনে, নিজের কান পরখ না করেই আমড়াতলায় কান খুঁজতে ছুটেছিল সে।
দামুর চেহারাটাও দেখবার মতো। অন্ধকারে তার দিকে তাকালে মানুষের বুকের রক্ত ঠান্ডা হয়ে যায়। ভূতের ভয়ে তারা রামনাম জপ করতে শুরু করে। কিন্তু আদপে সে বড্ডো ভালমানুষ। সরল সাধাসিধে মনের দামুকে নিয়ে সবাই হাসাহাসি করে। কেউই তাকে মূল্য দ্যায় না।
একটা বিশেষ কারণে দামুর একটা হাতির প্রয়োজন হয়। হাতি দিয়ে দামু কী করবে? সেটা তো বলা যাবে না, কিন্তু হাতি একটা দামুর চাই-ই চাই! হাতি না পেলে সে সন্ন্যাসী হয়ে যেতেও রাজি। কিন্তু হাতি জোগাড় করা কি এতই সোজা? হাতি তো আর গরু-ছাগল নয়।
সন্ধ্যেবেলা আমার বোনের বাড়িতে এসেছি লুচি-মাংসের নিমন্ত্রণ খেতে। ঘন্টাদুয়েক সময় ছিল হাতে। বোনের বইয়ের আলমারি থেকে নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের “সমগ্র কিশোর সাহিত্য” বের করে পড়ে ফেললাম চমৎকার এই হাতি-সন্ধান কাহিনি।
হাতি জোগাড় করা কি দামুর দ্বারা সম্ভব হবে? অবশ্যই হবে! চিরাচরিত ইচ্ছেপূরণের এই গল্পের ভিতরে নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় প্রবেশ করিয়ে দিয়েছেন তাঁর অনবদ্য মনভোলানো ম্যাজিক। ছোট্ট উপন্যাসটা শেষ করে মনে পড়ে গ্যালো— আরে! এই গল্পটা নিয়েই তো পরিচালক রাজা সেন একটা সিনেমা বানিয়েছিলেন। খুব সুন্দর সেই সিনেমার নাম “দামু”। উপন্যাসের নামটাও “দামুর হাতি” হলেই যথার্থ হতো। যাক গে, যা হওয়ার হয়ে গেছে। এবার আমি যাই, লুচি ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে!
.