Ratings1
Average rating4
নকশাল আন্দোলনকে কেন্দ্র করে লেখা আমার পড়া এখনও পর্যন্ত শ্রেষ্ঠ উপন্যাস এটি। যদিও উপন্যাসের কোথাও একবারের জন্যেও “নকশাল” শব্দটি ব্যবহার করা হয়নি। বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে চিন্তা করলে উপন্যাসটিতে অনেক খুঁত খুঁজে পাওয়া যাবে। খাপছাড়া কাহিনি, সাদামাঠা গদ্যশৈলী, মোটাদাগের চরিত্রনির্মাণ। দগদগে ক্রোধের ঘোরগ্রস্ত বহিঃপ্রকাশ কেউ কখনও সাজিয়ে-গুছিয়ে করতে পারে?
আদর্শজনিত আত্মত্যাগের কথাই শুধু নয়, উপন্যাসটিতে বর্ণিত হয়েছে একজন মায়ের সঙ্গে তাঁর ছেলের সম্পর্কের আখ্যানও। গোটা উপন্যাসজুড়ে, সকাল দুপুর বিকেল রাত, মা তাঁর সন্তানকে বোঝার চেষ্টা করছেন। যে সন্তানকে তিনি নিজের হাতে বড় করে তুলেছিলেন, সেই সন্তান এখন তাঁর নিজস্ব চিন্তা-আচরণকে প্রভাবিত করছে। সেই সন্তানের হাত ধরে তিনি সমাজকে চিনতে শিখছেন। মানুষের মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে থাকা মুখকে চিহ্নিত করতে শিখছেন। প্রতিবাদ জানাতে শিখছেন!
উপন্যাসের শেষদিকের কিছুটা অংশে ব্ল্যাক-হিউমরের উপাদান রয়েছে। এরকম চাঁচাছোলা ভঙ্গিতে ব্ল্যাক-হিউমরের প্রয়োগ বাংলা সাহিত্যে সচরাচর চোখে পড়ে না। খুব দ্রুত পড়ে শেষ করে ফেলা যায় ছোট আকারের এই উপন্যাসটা। কিন্তু, মাথা থেকে খুব দ্রুত বেরিয়ে যাবার নয় এই উপন্যাসের অভিঘাত। একদমই নয়। লেখক তাঁর আবেগকে পাঠকের মনেও সঞ্চারিত করতে সক্ষম হয়েছেন।
সবচেয়ে কঠিন নিজের মতো হওয়া।