Ratings1
Average rating2
কালো মেয়ে, তোর জন্য
আজ তুমি হরিণাক্ষী, যেহেতু সৌন্দর্যলোভী গুহামানবেরা
দীঘল হরিণীচোখ খুঁজেছিল যুগ যুগ ধরে
ক্ষুদ্রচক্ষু গুহানারীদের
বিমর্ষ ও অভিমানী মুখে।
নারীচোখে পড়েছিল পুরুষের সৌন্দর্যের টান—
সেই টানে জেগেছিল পৃথিবীতে রূপের সন্ত্রাস,
যার থাবা পড়েছিল প্রকৃতির যৌন-নির্বাচনে।
ঈষৎ আয়তচক্ষু যে রমণী, তারই ছিল বিপুল চাহিদা—
পুরুষের ব্যগ্র আলিঙ্গনে।
এভাবে রতির হাটে রূপের শাসনে, বিবর্তনে
হরিণাক্ষী নন্দনের জন্ম হয়েছিল।
তারই চাপে ধীরে ধীরে, বহু বহু প্রজন্ম পেরিয়ে
ক্ষুদ্রচক্ষু নারীগর্ভে
হরিণাক্ষী নন্দিনীর জন্ম হয়েছিল।
রূপের সন্ত্রাস এই— পুরুষ-কামনা
যা চায়, সে তা-ই পাবে—
উর্বশী, মেনকা, তিলোত্তমা।
স্বয়ং প্রকৃতি তার আজ্ঞাদাসী হবে।
তাহলে তোর কী হবে? কালো মেয়ে, বোঁচা মেয়ে,
ক্ষুদ্রচক্ষু মেয়ে?
প্রেমিক পাবি না তুই বসন্ত-উৎসবে?
রূপের বাজারে তোর অন্তহীন অপমান হবে?
মানবো না সৌন্দর্যের এই স্বৈরাচার।
পালটে দেবো কবিতার অলংকার, প্রতীক, উপমা–
ভেঙে দেবো রূপের শাসন।
আমার কবিতা হোক, কালো মেয়ে, তোর জন্য বিদ্রোহী নন্দন।