Ratings6
Average rating3.3
(সাড়ে-তিন তারা)
এই ক্ষুদ্রকায় উপন্যাসটা যখন লেখা হচ্ছিলো, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ তখনও শেষ হয়নি। উপন্যাসটির বিষয়বস্তুর সঙ্গে যুদ্ধের যোগসূত্র আছে বটে, কিন্তু এই কাহিনি আদৌ যুদ্ধকেন্দ্রিক নয়। প্রথমেই যে-বিষয়টা জানতে পেরে অবাক লেগেছে, বইটি লেখার সময় লেখিকার বয়স ছিলো মাত্র ২৪ বছর। এই বয়সে এত পরিণত উপন্যাস লেখা কীভাবে সম্ভব? এবং এত গভীর বিষয়বস্তুকে নিরীক্ষা করাও কীভাবে সম্ভব? লেখিকার প্রথম উপন্যাস এটি।
ক্রমাগত বোমাবর্ষণের অভিঘাতে মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন একজন সৈনিক। সেই সময়কার ভাষায় যাকে বলে shell-shocked হওয়া। তিনি বাড়ি ফিরে এসেছেন, কিন্তু বিগত পনেরো বছরের ঘটনাক্রমের ব্যাপারে সম্পূর্ণ বিস্মৃত হয়েছেন। ভুলে গেছেন দীর্ঘদিনের বিবাহিত স্ত্রীর কথা। মৃত পুত্রসন্তানের কথা। তাঁর শুধু মনে আছে পনেরো বছর আগেকার এক হারিয়ে যাওয়া প্রেমিকার স্মৃতি। সেই “কিশোরী” প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করার জন্য তিনি ব্যাকুল হয়ে উঠেছেন। প্রেমিকা যদিও এখন বিবাহিত এবং বিগতযৌবনা।
একজন স্মৃতিভ্রষ্ট পুরুষ এবং তাঁকে ঘিরে তিনজন নারীর মানসিক পরিস্থিতির গল্প এটি। ইংল্যান্ডের অপরূপ গ্রাম্য পরিবেশের পটভূমিকায় আর্থসামাজিক শ্রেণিব্যবস্থা, ভালোবাসা এবং বিষাদের গল্প এটি। অদ্ভুত লিরিক্যাল ভাষায় লেখা এই উপন্যাসটি পড়বার সময় অখণ্ড মনোযোগের প্রয়োজন হয়। কিছু কিছু অনুচ্ছেদ দুবার পড়ে দেখতে হয়। তাড়াহুড়ো করলে অসুবিধে হয়। শেষ পৃষ্ঠা উল্টে ফেলার পরে পাঠকের মনে কিছু প্রশ্ন দেখা দ্যায়। আমরা সবাই কিছু-না-কিছু ভুলে যেতে চাই।
One forgets only those things that one wants to forget.
ক্যানো ভুলে যেতে চাই আমরা জীবনের সেই ঘটনাগুলো?