Ratings14
Average rating4
২০২০ সালের ঘোরতর গৃহবন্দী একটা দিনে সে-বছরের নোবেল পুরস্কার ঘোষিত হওয়ার আগে পর্যন্ত আমি লুইস গ্লুক্-এর নাম কোনোদিন শুনিনি। একজন কবিকে যখন পুরস্কৃত করা হয়, তখন আমার ভালো লাগে। মনে হয় সারাদিনের ঝাঁঝালো নাগরিক শব্দগন্ধতাপশঙ্কা অতিক্রম করে, ক্লৌজ-সার্কিট ক্যামেরা লাগানো গদ্য-সাম্রাজ্যের প্রহরা এড়িয়ে, সবুজ ঘাসভর্তি উন্মুক্তকেশ একটা খোলা ময়দানকে স্বীকৃতি দেওয়া হলো।
I didn't even know I felt grief
Until that word came, until I felt
Rain streaming from me.
নোবেলজয়ী আজেবাজে অখাদ্য গল্প-উপন্যাস সহজেই পেয়ে যাই (যদিও কিনিনা সেগুলো - পয়সা দিয়ে কাঠালপাতা কেনার মতো মনে হয় - কাঠালপাতা ছাগলের খাদ্য - পয়সা খরচ করে এসব কে কেনে? - এর আগে কিনে ঠকেছি বারদুয়েক)। কিন্তু, এমনকি নোবেল পেলেও, কবিতার বই বাজারে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। দীর্ঘদিন হা-হতোস্মি অপেক্ষার পরে হঠাৎ সেদিন অঝোরবৃষ্টি সকালবেলায় আমাজন-বাহক আমাকে দিয়ে গেলেন লুইস গ্লুকের কবিতার বই। কাজের ব্যস্ততা এবং মনের আনন্দ চেপে রেখে বাহককে জিজ্ঞেস করলাম, চা খাবেন? তিনি বললেন, দ্যান অ্যাক্কাপ, খাই, যা বিষ্টি ...
I live essentially
In darkness. You are perhaps training me to be
Responsive to the slightest brightening. Or, like
The poets,
Are you stimulated by despair, does grief
Move you to reveal your nature?
গ্লুকের কবিতা পড়া শুরু করলে যেন অবধারিতভাবে মেরি অলিভারের কবিতার কথা মনে পড়ে যায়। সেই একই প্রকৃতির সঙ্গে সংলগ্নতা, দুঃখের মাঝেও সঞ্জীবনী অনুভবের সন্ধান (সেটা ঠিক “সুখ” নয়, “সুখ” হেব্বি ফালতু শব্দ), নিবিষ্ট আত্মউন্মোচন, ইত্যাদি। কিন্তু খানিক বাদেই ভুল ভাঙে। প্রকৃতির মাঝে ঈশ্বরের প্রতিবিম্ব খুঁজে পান মেরি অলিভার। গ্লুক্ খুঁজে পান নিজেকে। কিংবা নিজের সঙ্গে নিজের চলতে থাকা সংলাপকে। আমরা নিজেরাও তো, দিন রাত চব্বিশ ঘণ্টা, অনবরত নিজের সঙ্গে নিজে সংলাপ চালিয়ে যাই। ঈশ্বরের মতো একজন গোমড়ামুখো ভদ্দরলোকের সঙ্গে আপনি যেমন, আমি যেমন, গ্লুক্ও তেমনি, বেশিক্ষণ আলাপ চালিয়ে যেতে পারেননি (বন্ধুর সঙ্গে বন্ধুর যেমন আলাপ, তেমন আলাপের কথা বলছি। ইশকুলের ছাত্তরের সঙ্গে হেডমাস্টারের আলাপ নয়)।
Once I believed in you; I planted a fig tree.
Here, in Vermont, country
Of no summer. It was a test: if the tree lived,
It would mean you existed.
By this logic, you do not exist.
গ্লুকের কবিতার ভাষা সহজ, কিন্তু নিহিতার্থ একেবারেই তরল নয়। দ্রুতগামী কিংবা তাকলাগানো কিংবা ওরেব্বাসধর্মী কাব্যভাষা নয় তাঁর। তাঁর নিজের অস্তিত্ব এবং জীবনদর্শনের নিমগ্ন উন্মোচন ঘটেছে কবিতায়। প্রকৃতি তাঁর কাছে বিমূর্ত নয়, দৈনন্দিনতার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাঁর ভালোবাসা, দ্বিধা, পিপাসা, স্তব্ধতা, উপলব্ধি, তাঁর উদ্যান, উদ্যানের লাইল্যাক ফুল, লেটুশ পাতা, তাঁর প্রেমিক, আরো যা-কিছু জাগতিক আনন্দবেদনাময় বিষয় আছে, তারা এসেছে এই কবিতাগুলোতে। অভিমানও এসেছে। অভিমান ছাড়া কি কবিতা লেখা যায়?
Even here, even at the beginning of love,
Her hand leaving his face makes
An image of departure
And they think
They are free to overlook
This sadness.
মাঝে মাঝে মনে হয়, পচা ফুল, কেমিক্যাল ধূপকাঠি, স্যাঁতস্যাতে দেয়াল, চ্যাপ্টা আঙুর, পুরোহিতের ঘাম এবং প্রগাঢ় পোড়াতেলের গন্ধে-ভরা কোনো মন্দিরের প্রায়ান্ধকার গর্ভগৃহে নয়— ঈশ্বর আসলে আমার শরীরের ভেতরেই কোথাও গ্যাঁট হয়ে বসে আছেন। বসে বসে খোলা-ভেঙে চিনেবাদাম খাচ্ছেন আর টাইমপাস করছেন। আপনি আপাতত ওখানেই বসে থাকুন, মেসোমশাই। আরেকটু বুড়ো হই, তখন আপনার খোঁজখবর নেওয়া যাবে, কেমন?
As I get further away from you
I see you more clearly.
This is the earth? Then I don't belong here.
Doesn't joy, like fear, make no sound?
[এই রিভিউটা, একটানা সময়ের অভাবে, বেশ কয়েকদিন ধরে ধীরে ধীরে লেখা। তাই একটু খাপছাড়া হয়ে গেছে।]