Ratings1
Average rating4
We don't have a description for this book yet. You can help out the author by adding a description.
Reviews with the most likes.
আজ বাইশে শ্রাবণ। দুঃখের দিন। রবীন্দ্ররচনাবলী ঢুঁড়ে বিমর্ষ টাইপের কিছু পড়ার দরকার ছিলো। কিছু না হোক, রবীন্দ্রবিরচিত গুটিকয় “স্যাড সং” শুনলেও চলতো। আমি বরং উল্টো কাজটাই করলাম। রবিবার দুপুরে ফ্রায়েড রাইস আর চিলি চিকেন ভক্ষণ করার পরে, কিছুতেই মনে দুঃখের আমদানি করতে পারলাম না (ভোজনরসিক হওয়ার উপকারিতা #১৭)। তাই দুঃখের ঘাড়ে রদ্দা মেরে “চিরকুমার সভা” পড়লাম।
চিরকুমার সভাকে নাটক না-বলে প্রহসন বলাই ঠিক হবে (প্রহসন যদিও নাটকেরই একটা সাব-জন্রা)। প্রহসনের মূল উপাদান হলো ছ্যাবলামি এবং অতিরঞ্জন। রবীন্দ্রনাথের দাড়িগোঁফের আড়ালে লুকিয়ে থাকা ফিচেল হাসিটাকে চট্ করে আন্দাজ করা যায় না। তাঁর কবিতা গান গল্প উপন্যাস নাটক প্রবন্ধের বেশিরভাগই সিরিয়াস গোছের। তবু মাঝে মাঝে গুম্ফ-আচ্ছাদিত সেই ফিচেল হাসিটা আলগোছে টের পাওয়া যায়। চিরকুমার সভাতে তিনি, যাকে বলে, হাত খুলে ব্যাটিং করেছেন।
নাটকটা পাঠ করে বেশ নির্মল আনন্দ লাভ করেছি। পাশাপাশি এটা ভেবে আফসোস হয়েছে যে, এর অভিনয়রূপ দেখতে পেলে আরো উপভোগ্য হতো। নাটকের কাহিনিসূত্রটা একেবারেই জটিল নয়। ছেলেমানুষি কাজকর্মে ভরপুর। কিন্তু সংলাপের সরস চাতুর্যে, ঘটনার অভিনবত্বে, ফাঁকে-ফাঁকে টুকরো-টুকরো কাব্যের সংযোজনে, নাটকটার অভিনয় একটা জমজমাট ব্যাপার হবে। বিষয়বস্তুর দিক দিয়ে এর মধ্যে গাম্ভীর্য একেবারেই নেই। কাহিনির পরিণতির দিক দিয়েও মধুরেণ সমাপয়েৎ ঘটেছে। এরকমই কিছু একটা পড়তে চাইছিলাম আজকে। এবারের বাইশে শ্রাবণের দিন সিরিয়াস কিছু পড়লাম না বলে আশা করি কিছু মনে করেননি ঠাকুরমশাই।
(নিজের মৃত্যুদিবস উপলক্ষ্যে জনসাধারণের ন্যাকামি এবং আদিখ্যেতা দেখে তিতিবিরক্ত হয়ে শান্তিনিকেতন ছেড়ে চলে যাচ্ছেন রবীন্দ্রনাথ)