"Life of Galileo (German : Leben des Galilei), also known as Galileo, is a play by the twentieth-century German dramatist Bertolt Brecht. The first version of the play was written between 1937 and 1939; the second (or 'American') version was written between 1945-1947, in collaboration with Charles Laughton. The play received its first theatrical production at the Zurich Schauspielhaus, opening on 9 September 1943. This production was directed by Leonard Steckel, with set-design by Teo Otto. The cast included Steckel himself (as Galileo), Karl Paryla and Wolfgang Langhoff. The second version opened at the Coronet Theatre in Los Angeles on 30 July 1947. This was directed by Joseph Losey and Brecht, with set-design by Robert Davison. Laughton played Galileo, with Hugo Haas as Barberini and Frances Heflin as Virginia. This production opened at the Maxine Elliott's Theatre in New York on 7 December of the same year. A third production, by the Berliner Ensemble with Ernst Busch in the title role, opened in January 1957 at the Theater am Schiffbauerdamm and was directed by Erich Engel, with set-design by Caspar Neher. The play was first published in 1940"--Www.ulike.net (Nov. 8, 2010).
Reviews with the most likes.
বার্টোল্ট ব্রেখ্ট্-এর সবচেয়ে বেশি পরিচিত এবং অভিনীত নাটকের নাম “লাইফ অফ গালিলেও”। নাটকটিকে শুধুই একটি “ঐতিহাসিক নাটক” হিসেবে গণ্য করলে ভুল হবে যদিও। ইতালীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী গালিলেও গালিলেই একজন ইতিহাসবিখ্যাত মানুষ ছিলেন বটে, কিন্তু গালিলেও'র জীবনকে এখানে নাট্যকারের নিজস্ব বক্তব্যপ্রকাশের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। নাটকটিকে তাই “ঘটনাপ্রধান” নাটক হিসেবে না পড়ে “বিষয়প্রধান” নাটক হিসেবে বিবেচনা করাটাই কাজের কাজ হবে।
সুতরাং প্রশ্ন আসে, এই নাটকের বিষয়বস্তু কী? নাট্যকারের বক্তব্যই বা কী? নাটকের কাহিনির ব্যাপারটা খুব সংক্ষেপে আগে জেনে নেওয়া যাক। যুগের বিচারে গালিলেও দীর্ঘজীবী মানুষ ছিলেন। সাতাত্তর বছর বেঁচেছিলেন (১৫৬৪-১৬৪২)। ষোলো শতকের বেশ খানিকটা এবং সতেরো শতকের বেশ খানিকটা সময় জুড়ে তিনি পৃথিবীর হালচাল দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন। ইতালির জনজীবনে সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মনৈতিক, চারিত্রিক এবং বৌদ্ধিক বিষয়গুলো তখন “দেখভাল” করতো রোমের খ্রিশ্চান ক্যাথোলিক চার্চ (ভ্যাটিকান)। এই চার্চের বড়োকর্তারা তখনও এমন একটা জগতে বাস করতেন, যেখানে সূর্য পৃথিবীর চারিদিকে ঘুরছে এবং পৃথিবী স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে।
গালিলেও'র জন্মের ঠিক কুড়ি বছর আগে পোলিশ জ্যোতির্বিজ্ঞানী নিকোলাস কোপার্নিকাস চার্চের এই চিরাচরিত বিশ্বাসকে ধাক্কা দিয়ে বলেছিলেন, সূর্য নয় বরং পৃথিবীই সূর্যের চারিদিকে ঘুরছে। বাইবেলবিরোধী এই “অদ্ভুত” দাবি নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই চার্চের তরফে বেশ জলঘোলা করা হয়। নতুন এই তত্ত্ব নিয়ে বাড়াবাড়ি করার অপরাধে জর্ডানো ব্রুনো নামের একজন ইতালীয় দার্শনিককে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়। কিন্তু কোপার্নিকাস হোক কিংবা ব্রুনো, এঁরা কেউই পরীক্ষানিরীক্ষার মাধ্যমে এই নতুন তত্ত্বকে প্রমাণ করার চেষ্টা করেননি। কোপার্নিকাসের তত্ত্ব তখনও গাণিতিক বিশ্লেষণের গণ্ডিতেই আবদ্ধ রয়েছে। কোপার্নিকাসের তত্ত্বকে প্রথম হাতেকলমে প্রমাণ করার চেষ্টা করলেন গালিলেও। নাটকের কাহিনির কাঠামো মোটামুটি এটুকুই।
The evidence of your own eyes is a very seductive thing.
কোনো কিছু লোকের মুখে শোনা আর নিজের চোখে দেখার মধ্যে আকাশ-পাতাল পার্থক্য রয়েছে। গালিলেও নিজে টেলিস্কোপ আবিষ্কার করেননি, কিন্তু টেলিস্কোপের ভিতর দিয়ে দেখলেন, সূর্যকে পৃথিবীর চারিদিকে ঘোরাবার গল্পটা আসলেই ভুয়ো। তিনি এই বিষয়টা নিয়ে চিন্তাভাবনা করা শুরু করলেন। চার্চের বড়োকর্তারা বললেন, “দেখুন, আপনাকে আমরা বিজ্ঞানী হিসেবে সম্মান করি। ফালতু একটা বিষয় নিয়ে টানাটানি করে নিজের পায়ে নিজে কুড়ুল মারবেন না”।
গালিলেও ভীতু কাপুরুষ ছিলেন না। ফ্লোরেন্সে বসবাস করার সময়ে শহরে যখন প্লেগ রোগের প্রাদূর্ভাব দেখা দিলো, তখন তিনি অন্যদের মতো মৃত্যুভয়ে ভীত হয়ে শহর ত্যাগ করেননি, গবেষণার কাজ চালিয়ে গেছেন। কিন্তু বিজ্ঞানকে এবং নতুন চিন্তাভাবনাকে যিনি প্রাণের চেয়েও বেশি ভালবাসতেন, সেই তিনিই পরবর্তীকালে চার্চের সামনে মাথা নত করেছিলেন ক্যানো? পূর্বসূরিদের মতো তাঁকেও চার্চ সাবধান করেছিল : খবরদার, পৃথিবীকে যেন সূর্যের চারিদিকে ঘোরাবার চেষ্টা না করা হয়।
A man who doesn't know the truth is just an idiot, but a man who knows the truth and calls it a lie is a crook.
পুরোনো বস্তাপচা অবৈজ্ঞানিক বিশ্বাসকে ধর্মের দোহাই দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা হয় বিভিন্ন কারণে। সবচেয়ে বড়ো কারণ হলো, ধর্মগুরুরা নিজেদের কর্তৃত্ব হারাতে ভয় পান। বাইবেল (কিংবা অন্য যেকোনো ধর্মগ্রন্থ) তাদের আরাম-আয়েশের ব্যবস্থা করে। তাদের হাতে একচ্ছত্র ক্ষমতা তুলে দ্যায়। সেই বাইবেলের কথা যদি সাধারণ মানুষ অবিশ্বাস করতে শুরু করে তাহলে তো খুব মুশকিলের ব্যাপার হবে। কিন্তু গালিলেও আরেকজন জর্ডানো ব্রুনো হয়ে পুড়ে মরতে চাননি।
ব্রেখ্ট্-এর এই নাটকের সবচেয়ে বড়ো বৈশিষ্ট্য হলো, তিনি তাঁর নাটকের নায়ককে দিয়ে হিরোগিরি করানোর চেষ্টা করেননি। তাঁর নাটকের নায়ক একজন রক্তমাংসের মানুষ। তিনি মরতে ভয় পান না যদিও, কিন্তু এটুকু বোঝেন, শক্তিশালী প্রতিপক্ষের সামনে অতিরিক্ত বীরত্ব দেখিয়ে বেঘোরে প্রাণ খোয়ানোর কোনও মানে হয় না। যদি নিজের বিশ্বাসকে প্রতিষ্ঠা করতেই হয়, বেঁচে থেকেই করতে হবে। আর বেঁচে থাকার জন্যে মাঝেমাঝে মাথা নোয়াতে হয়। গাধাদের সামনেও মাথা নোয়াতে হয়। কারণ নিজের ইগোর চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ভবিষ্যতের পৃথিবীর জন্যে “সত্যিকথা”র প্রদীপটাকে যেভাবে হোক প্রজ্জ্বলিত রেখে যাওয়া। যদি তিনি মারা যান, তাঁর সঙ্গে সত্যিটাও মারা যাবে। অতএব তাঁকে বেঁচে থাকতে হবে।
চার্চের সামনে মাথা নিচু করেও তিনি মিথ্যার সামনে মাথা নিচু করেননি। গৃহবন্দী অবস্থায় গোপনে নিজের বৈজ্ঞানিক কাজকর্ম চালিয়ে গেছিলেন। নাটকের একদম শেষের দিকে নিজের পাণ্ডুলিপি ইতালির বাইরে পাচার করতে সফল হয়েছিলেন তিনি। তাঁর জীবনের তিরিশ বছরের গবেষণাসমৃদ্ধ সেই পাণ্ডুলিপি। নাটকের একজায়গায় গালিলেও বলেন, “Unhappy the land that is in need of heroes.” যে-দেশে হিরোর দরকার পড়ে, সেই দেশের কপাল খারাপ।
অথচ আজকের দিনের পৃথিবীর দিকে যদি তাকাই, চারিদিকে হিরোদের ছড়াছড়ি। নায়ক ভজনার ধুম লেগে আছে দুনিয়াতে। নাটকটি লেখা হয়েছিলো ১৯৩৮ সালে। ইয়োরোপের রাজনৈতিক গগনে তখন উত্থান ঘটেছে অ্যাডল্ফ হিটলার নামক এক মহানায়কের। গালিলেও'র জমানাতেও নায়কের সংখ্যা কিছু কম ছিল না (সবচেয়ে বড়ো নায়ক ছিলেন ভ্যাটিকানের পোপ)। কিন্তু গালিলেও প্রকৃত চালাক লোক ছিলেন বলেই মনে মনে ভেবেছিলেন : চার্চের সামনে মাথা যদি নেহাত নোয়াতেই হয়, তাহলে নুইয়ে নিই। আমার তো হিরোগিরি দেখিয়ে লাভ নেই। শহীদ হয়ে কাজ নেই বাপু, শহীদ হয়ে স্বর্গে গেলে দরকারি কাজগুলো কে করবে?
যে-বইটির পাণ্ডুলিপি ইতালির বাইরে পাচার করেছিলেন সেই বইটি বিজ্ঞানের দুনিয়ায় “Two New Sciences” নামে বিখ্যাত হয়ে আছে। বইটির ব্যাপারে বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং মন্তব্য করেছিলেন :
So great a contribution to physics was “Two New Sciences” that scholars have long maintained that the book anticipated Isaac Newton's laws of motion.
যদিও অনেক সময় আমরা উল্টোটা মনে করি, কিন্তু বিচক্ষণতা (prudency), বাস্তববুদ্ধি (pragmatism), সততা (integrity) এবং নৈতিকতা (morality) — এই শব্দগুলো একে অপরের শত্রু নয়।