Ratings1
Average rating3
We don't have a description for this book yet. You can help out the author by adding a description.
Reviews with the most likes.
আমার প্রিয় গদ্যশিল্পীদের তালিকায় ট্রুম্যান কাপোটি'র নাম উপরের দিকে থাকবে। এমন ঝকঝকে গদ্য লেখার হাত তাঁর, পড়লে মনে হয় বৃষ্টিঝরা বিকেলে বারান্দায় বসে গরম চায়ে রাস্ক বিস্কুট ডুবিয়ে খাচ্ছি। তাঁর “ইন কোল্ড ব্লাড” বইটা পড়ার অভিজ্ঞতার কথা এখনও বেশ মনে আছে। ক্রাইম জার্নালিজমকে সাহিত্যের পর্যায়ে তুলে ফেলেছিলেন সেই বইতে। তারপর “ব্রেকফাস্ট অ্যাট টিফ্যানিজ” সহ দু-তিনটে ছোটগল্প পড়েছিলাম। গল্প যেমনই লাগুক, তাঁর গদ্য পড়লে একটা আলাদা আরাম পাওয়া যায়। “মিউজিক ফর ক্যামিলিয়ন্স” বইটা বোধহয় স্টাইলিশ এবং উদ্ভাবনী গদ্যকার হিসেবে কাপোটি'র সবচেয়ে আকর্ষণীয় কাজ (যদিও তাঁর সব ছোটগল্প এখনও পড়িনি আমি)।
তিনটে আলাদা অংশে বইটাকে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম অংশে কয়েকটা ছোটগল্প রয়েছে। নাহ, ছোটগল্প বললে বোধহয় ভুল হবে। ওগুলোকে “ক্যারেকটার-স্কেচ” বলা উচিত। কাপোটির পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা নিয়ে তো আলাদা করে কিছু আর বলার নেই। তাঁর চমৎকার সেন্স-অফ-হিউমর নিয়েও কিছু বলার নেই। এই বইয়ের মুখবন্ধে লেখক নতুন একটা সাহিত্য-ফর্মের উল্লেখ করেছেন : “নন-ফিকশন নভেল” (আশা করি নামটা শুনেই আমরা খানিকটা আন্দাজ করতে পারছি ব্যাপারটা আসলে কী জিনিস)। তো, সেই হিসেবে এই গল্পগুলোকেও “নন-ফিকশন শর্টস্টোরিজ” বলা যেতে পারে।
তার পরের অংশটা, মানে বইয়ের দ্বিতীয় অংশটাকেই আসলে তিনি “নন-ফিকশন নভেল” হিসেবে উল্লেখ করেছেন। আমেরিকার মিডওয়েস্ট অঞ্চলের (সম্ভবত ক্যানসাস স্টেটের) একটা স্মলটাউনে ঘটে যাওয়া সিরিয়াল কিলিংয়ের সত্যি ঘটনাকে উপজীব্য করে লেখা কাহিনিটা পড়ে ভীষণ আনন্দ পেয়েছি। আনন্দ পাওয়ার কথাটা স্বীকার করতে একটু লজ্জা লাগছে যদিও। একটার পর একটা মানুষ খুন হয়ে যাচ্ছে (তাও আবার হতভম্বকর উপায়ে), আর আমি ভাবছি : আহা, এভাবেও লেখা যায়! কেয়া বাত, কেয়া বাত!
তৃতীয় অংশটা বইয়ের সবচেয়ে দুর্দান্ত অংশ। অংশটার নাম : “কনভার্সেশনাল পোর্ট্রেটস্”। মানে, পারস্পরিক কথোপকথনের মাধ্যমে মানুষের চারিত্রিক রূপ ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। সাতজন আলাদা আলাদা মানুষকে নিয়ে লিখেছেন। সাতজনের সামাজিক স্ট্যাটাস সাতরকম। কেউ লোকের বাড়িতে ঘরদোর পরিষ্কার করার কাজ করেন। কেউ ওয়াল স্ট্রিটের নামজাদা (কিন্তু ঘনঘন মদ্যপায়ী) ব্যক্তিত্ব। কেউ আবার কুখ্যাত সাইকোপ্যাথ চার্লস ম্যানসনের ঘনিষ্ঠ সহকারী (ইদানিং যিনি, বলাই বাহুল্য, শ্রীঘরে বিরাজ করছেন)। সাতজন মানুষের মধ্যে অভিনেত্রী মেরিলিন মনরো-ও আছেন (যিনি নাট্যকার আর্থার মিলার-এর প্রেমে পড়েছেন সদ্য)। সাতজনের শেষ ব্যক্তিটি হলেন লেখক নিজেই। তিনি নিজেই নিজের ইন্টারভিউ নিয়েছেন। প্রত্যেকটা লেখাই উপভোগ্য এবং চিন্তার খোরাক জোগানদায়ী। কাপোটি'র রসবোধের ব্যাপারটা বারবার বলতে ইচ্ছে করে। মোটাদাগের নয়, খুব সূক্ষ্ম এবং তৃপ্তিদায়ক। কেবল রসবোধ আর স্টাইল নয়, প্রতিটা লেখার মধ্যে লেখকের একটা গভীর মানবিক সত্ত্বা টের পাওয়া যায়। একটা ছায়াচ্ছন্ন “হিউম্যান” দিক। নিজের সঙ্গে নিজের কথোপকথনের যে-লেখাটা, সেখান থেকে ছোটো একটা টুকরো তুলে এনে এই রিভিউটা সমাপ্ত করা যাক।
Q : If you could be granted one wish, what would it be?A : To wake up one morning and feel that I was at last a grown-up person, emptied of resentment, vengeful thoughts, and other wasteful, childish emotions. To find myself, in other words, an adult.
এমন একটা সকালের কথা আমিও প্রায়শই চিন্তা করি। কিন্তু হে মা জগদম্বা, এখনও সেই সকালটার দেখা পেলাম না।