বহুদিন পর প্রায় একদিনে এবং রাতের ঘুম কিছুটা বিসর্জন দিয়ে একটা বই শেষ করার অর্থ বইটা ভালো লেগেছে।কাহিনী তার গতিতে এগিয়ে গেলেও লড়াইগুলো শুরু হয়ে উপভোগের আগেই যেন শেষ হয়ে গেছে। [b:অন্ধ জাদুকর 51250804 অন্ধ জাদুকর Shariful Hasan https://i.gr-assets.com/images/S/compressed.photo.goodreads.com/books/1581675876l/51250804.SY75.jpg 75983405] পড়ার সময়েই মনে হচ্ছিলো এই দীর্ঘ সময়ের জন্য এই বৃদ্ধদেরকেই কেন অপেক্ষা করতে হবে? তারা কি পারতো না নতুন জাদুকর খুঁজে তাদের প্রস্তুত করতে? বিপক্ষের সাথে লড়াইয়ের সময়ে বিষয়টা আরো মনে আসছিলো।বানান ভুল, ভেঙে যাওয়া শব্দ, উধাও হয়ে যাওয়া লাইনের অংশবিশেষ খুঁচিয়েছে। তবে বেশি যেটা চোখে লেগেছে, ক্যাজুয়াল পোশাকে রাতে বাইরে বেরিয়ে সারারাত বাইরে থেকে, সকালে কি করে একজনের কাছে খালি অফিস ইউনিফর্মই থাকতে পারে![b:অন্ধ জাদুকর 51250804 অন্ধ জাদুকর Shariful Hasan https://i.gr-assets.com/images/S/compressed.photo.goodreads.com/books/1581675876l/51250804.SY75.jpg 75983405] বইতে মনসুরের বাবা-মা সম্পর্কে বলা হলো তারা ফরিদ সালাহ উদ্দীনের কাছে কাজ করতো। একসাথেই মারা যায় তারা। তাদের দিল্লির সবচেয়ে বড় হাসপাতালে রেখে অনেকদিন চিকিৎসাও করানো হয়েছিলো। কিন্তু এ বইতে এসে লেখা হলো, কে বা কারা যেন মনসুরকে ডাস্টবিনের পাশে ফেলে রেখে গিয়েছিলো, সেখান থেকে উদ্ধার করেই নিজের কাছে রেখে দেন তিনি! এদিকে আরেকটু মনে হয় নজর দেয়া উচিত ছিলো লেখকের।শেষাংশের চমকটা বেশ অনুমেয়ই ছিলো, লেখক কিছুটা জোরও করেছেন ওদিকে চিন্তা করতে পাশাপাশি ওদিক থেকে দৃষ্টি সরানোরও চেষ্টা চালিয়েছেন। যদিও আমার মনে হচ্ছিলো চমকটা অন্যদিক থেকে আসলে খুব একটা মন্দ হতো না। জানি না আরেক খণ্ড আসবে কিনা, আসলে ভালো না আসলেও শেষ যেভাবে হয়েছে তাতে আটকাবে না।
এ নির্ঘাত ছাপাখানার ভূত এরই কাজ! তা নাহলে, অনুবাদ, প্রুফ রিডার সবার চোখ এড়িয়ে, পুরো বইতে একটাও ষ্ঠ নেই! অনুষ্ঠিত হয়ে যাচ্ছে অনুতি, প্রতিষ্ঠা হয়ে যাচ্ছে প্রতি্া, প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে প্রতিতি! এবং অনুমান করছি এ ঘটনা সমগ্র বই জুড়েই!
অনেক নতুন তথ্য জানলাম। সময়-সুযোগ করে টাইম মেশিনে চেপে ঘুরে আসতে হবে সত্যতা যাচাইয়ের জন্য।
বড্ড বুড়িয়ে গেছি, নাহলে এই জিনিসকে এতো কম রেটিং দেয়ার আর কোন কারণ তো নেই।
টম দুরন্ত এক বালক। তার বড় সঙ্গী তার কল্পনাশক্তি।
বন্ধুদের সাথে নিয়ে সে জড়িয়ে পড়ে নানারকম বিপদে। দমে যায় না ও, ঠিকই খুঁজে নেয় বিপদ থেকে মুক্তির পথ।
তো এই টম আর তার কিছু অভিযানের কাহিনী জানা যাবে এ থেকে।
সামান্য কিছু বানান ভুল রয়েছে ছাপাখানার ভূতের জন্য। ওসব অগ্রাহ্য করার মতোই ক্ষুদ্র।
অনুবাদকের মাত্র তৃতীয় বই এটি। সে হিসেবে যথেষ্ট ভালো। তবে আরেকটু যত্নশীল হলে আরো ভালো করতে পারবেন ভবিষ্যতে এই আশা রাখলাম।
শয়তানের আখড়া - ৪.৫/৫
ওয়েস্টার্ন মানেই যে ধুন্ধুমার একশন, পাতায় পাতায় পড়তে থাকা লাশ, এ ধারণা যে সঠিক নয় তার প্রমাণ বলা চলে এটিকে। অ্যাকশনের কমতি থাকলেও যথেষ্ট গতিময়তা বজায় ছিলো। কিছু প্রশ্নের উত্তর পাবার জন্য মনটা হয়তো খুঁতখুঁত করতে পারে, তবে তা এমন আহামরি নয়।
স্বভাবতই ফ্ল্যাপে যেখানে বলাই আছে অপরাধী সংগঠন রিঙের শেষ দেখে নিতে চায় কাহিনীর নায়ক। সেখানে আর দশটা ওয়েস্টার্নের তুলনায় ভিন্নপথে এগুনোটাই ভালো লেগেছে সবচেয়ে বেশি। পেশি এবং অস্ত্রের তুলনায়ও যে শক্তি ধারণ করা অন্যকিছুর পক্ষে সম্ভব তাই উঠে এসেছে এখানে।
অধিকার - ৪/৫
লোভ, বন্ধুত্ব, ভালোবাসা উঠে এসেছে এ কাহিনীতে। তবে কিছু জায়গা একটু বেশিই বেখাপ্পা লেগেছে, মারভেল কমিকস হলে দ্বিধা থাকতো না।
উত্তপ্ত কারাগার - ৩.৫/৫
আগের দুটোর তুলনায় কিছুটা স্লো মনে হতে পারে। তবে রক বেননের সম্পর্কে জানার আগ্রহ জন্মেছে।
যখন পড়া শুরু করি তখন মনে হয়েছিলো কিছু লিখি, কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে দীর্ঘ বিরতিতে পড়ার কারণে আপাতত সে তাৎক্ষণিক অবস্থাটাতো আর প্রকাশ করতে পারবো না। তাছাড়াও যা লিখবো বলে ভেবেছিলাম, তার সাথে অধিকাংশেরই হয়তো দ্বিমত হবে। যা লিখি তা রিভিউ নয় বরং মনের অবস্থা বই পড়ার পরে। তবে এটুকু বলি, প্রায় সবগুলো উপন্যাসেরই কংকাল একই, শুধু মাংসের কারণে চেহারা আলাদা।
একাত্তর ৪/৫
চাকা ২/৫
ক্ষুধা প্রেম আগুন ৩/৫
ইছামতীর এপার-ওপার ২/৫
আধুনিক পুতুলনাচের ইতিকথা ৩/৫
ভাঙা নৌকা ২.৫/৫
প্রেম (পোড়া মাটির কাজ ২, উৎসব ৩) ২.৫/৫
শ্রাবস্তীর দিনরাত্রি ৩/৫
শ্যামলী তোমার মুখ ১/৫
প্রবেশ (২, রহস্যময় ২) ২/৫
গভীর গভীরতর অসুখ ১/৫
হে সংসার হে লতা ২/৫
কলকাতা ১/৫
পরিপ্রেক্ষিতের দাসদাসী ১/৫
সর্বসাকুল্যে ২.১৫/৫
ক্যাসল হাউজের খুনি: ২.৫/৫
বারবার ঘুরেফিরে এক-এ এসেছে, শুন্যতে আসলেই চুকেবুকে যেতো সব সহজেই! আমার কাছে ভালো লাগে নি খুব একটাপুলিশদের ব্যর্থতা চোখে লেগেছে আমার, যেখানে শুরুতেই আমার সন্দেহের তীর যাকে বিদ্ধ করলো..., তাই বলে আপনাদেরও যে লাগবে না এমনটা নয়, বরং ভালো লাগাটাই স্বাভাবিক।
দি আণ্ডারডগ: ৩/৫
মনস্তাত্ত্বিক চোর-পুলিশ খেলার মধ্য দিয়ে অপরাধীকে ভুল করিয়ে দেয়া, বিষয়টা খারাপ না মোটেই!
দ্য কম্প্যানিয়ন: ৩/৫
মাত্র ২০ পাতার মতো একটা গল্প, শুরু হবার আগেই যেনো শেষ হয়ে গেলো!
শুরুর কথা বা মূল যে থিম সেটা ভালোই। এই অগ্রসরমান যুগে সবাই যখন সবকিছুতে পারদর্শী হতে চায়, এখানে বলা হয়েছে তার বিপরীতটা। অর্থাৎ নিজে আগে নিজেকে জানো সে হিসেবে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাও।
কিন্তু আমার স্ট্রেন্থ কি সেটা না জেনে এতোসব স্ট্রেন্থের বৃত্তান্ত আপাতত পড়ার ইচ্ছা নাই। পরে যদি কখনো মনে চায় দেখবোনে।
রিভিউ এর র'ও লিখতে পারি না আমি। যা লিখি, মানে যদি লিখি তা হলো পড়া শেষে তাৎক্ষণিক মনের অবস্থাটা।
যারা স্পয়লার পড়েছেন তাদের জন্য সমবেদনা।
বেশ কিছুদিন ধরেই গোয়েন্দা-রহস্য জনরার বইগুলো পড়তে বসলেই শুরুর দিকেই কেন যেন ঠিক করে ফেলি এই আসল আসামী।
তো আমি যখন এই বইয়ের মূল চরিত্রগুলোর নাম জানলাম এবং এক বা একাধিক ব্যক্তিকে সন্দেহের তালিকায় অগ্রাধিকার দিয়েছিলাম। তো আমি কি সঠিক ছিলাম? নাহ এ নিয়ে কিছু বলতে গেলে এবারে আসলেই স্পয়লার হয়ে যাবে।
তবে ১৬ বছর আগের কেসের পেছনে ছুটে বেড়াতে, মনস্তাত্ত্বিক বিচার বিশ্লেষণ (নাহ এ আমি করি নি, আমি যে আগেই চিহ্নিত করে বসে আছি, আমি শুধু মিলিয়ে গিয়েছি) খুব একটা খারাপ লাগবে না আশাকরি।
গল্পগুলোর বিষয়বস্তু অনুসারে অনুবাদের সাথে সাথে যদি সামান্য কিছু সম্পাদনাও করা হতো, তাহলে হয়তো প্রকৃত রস আস্বাদন করা সম্ভব হতো। অনুবাদের কারণেই হয়তো গল্প গুলোর বিষয় ভালো লাগলেও মূল গল্প হিসেবে পড়ে আরাম পেলাম না।
অ্যাপাচি চীফ - ২.৫/৫
হুট করে শেষ হয়ে গেলো, বেশ কিছুটা খাপছাড়া ভাবেই।
ঘায়েল - ৪.৫/৫
পরিস্থিতি মানুষকে বদলে দেয়, তাকে পরিণত করে নতুন মানুষে যার কথা স্বপ্নেও ভাবতে পারে নি হয়তো সে। আউটল, অ্যাপাচি, স্বার্থপরতা, বিদ্বেষ এর ভীড়ে বেঁচে থাকার সংগ্রামের কাহিনী এটি। যেখানে এসে ভাগ্যের সূতোয় একসাথে বাঁধা পরেছে এক ড্রিফটার, এক র্যাঞ্চার, এক জুয়াড়ী, এক স্কুলটিচার সহ আরো অনেকেই। শেষটা হয়তো অন্যরকম হলেও পারতো...
মূলত ৫-ই দিতাম, কিন্তু কয়েকটা জায়গা নিজের মনমতো হয়নি বলে আধা খেয়েদিলাম।
ডুয়েল - ৩.৫/৫
মূলত এটা একটা গল্পসমগ্র। তা হলেও, ঘুরেফিরে বারবার এসেছে কিন রাইনার, লায়ন রায়ান এবং এদের নিয়ে আরো জানার আগ্রহও জন্মেছে। গল্পগুলো নানান স্বাদের (না মানে বুনো পশ্চিমের গল্পের স্বাদে যা ভিন্নতা আনা যায় আরকি!)
পুরোটা চলিত এর মাঝে গোটাকয়েক সাধু পাতা কিছুটা হলেও বিরক্তি ধরিয়েছে।
তবে যেভাবে জাল ছড়িয়েছে, তা কীভাবে ছাড়াবে সেটা জানার জন্য পরবর্তী খন্ড দ্রুত না পড়ার কোন বিকল্প দেখছি না।
মানুষের লোভ, উচ্চাকাঙ্ক্ষা, অবিশ্বাস, মুখে মধু অন্তরে বিষ, প্লানের আড়ালে প্লান এসব নিয়েই এগিয়েছে আখ্যান।
নিতে পারি না জিনিসগুলা আর
কাকাবাবুকে বেশ কয়েকটা গল্পে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী দেখা যায় (যেটা আমার চোখে অহংকারী বোধ হয়)। এটাও তার একটা।
এটি কী ছিলো আসলে? চরম উত্তেজনাময় একটি থ্রিলার নাকি একটি মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস নাকি একটি প্রেমের উপন্যাস? সবকিছুর মিশেলে এটি একটি দারুণ উপভোগ্য বই। যারা বর্তমানের থ্রিলারপ্রেমী, তাদের কাছে হয়তো সেরকম ডোপামিনের খোরাক হবে না এটি। কিন্তু আশা করি ভালো লাগবে।
যেই আমলের লেখনী, সেই আমলে বোধকরি এসবের উপযোগ থাকিয়া থাকিবে, কিন্তুক, বর্তমানকালে আসিয়া, ইহা পাঠ করিবার মতো ধৈর্য্য এবং জ্ঞান এই দুইয়ের কোনটিই এই নিষ্কর্মার মধ্যে না থাকিবা সত্ত্বেও ইহা পাঠ করিবার যেই প্রয়াস গ্রহণ করিয়াছে, তাহাতে বাহবা আশা করিলে উহাতে দোষের কিছু ঘটিবে কি?
প্রতি ছত্রে ছত্রে সংস্কৃতের চপেটাঘাত সহিতে হইতেছে। তদ্বসত্ত্বেও যদি বা ইহা বলিবার অপচেষ্টা করিয়া থাকি যে - ইহাস্থিত বহুবিবাহ দ্বিতীয় পুস্তকখানাকে অদ্যকালের মুখবইতে মতামত বাক্সে যাহা ঘটিয়া থাকে মতোবিরোধ হইলে, তাহারই লিপিবদ্ধ সংস্করণ সে যুগের, মনে হয় না কেহ ইহাতে দ্বিমত করিবেন।
ইহা তো লিপিবদ্ধ হইলো ‘বহুবিবাহ' পুস্তকদ্বয়ের বিবরণী (আদৌ ইহা সত্য নহে, কোনো বিবরণীই এস্থলে উপস্থিত হয় নাহি)। পরবর্তীতে আগমন ঘটিলো, কস্যচিৎ উপযুক্ত ভাইপোস্য প্রণীত ‘অতি অল্প হইলো' এবং ‘আবার অতি অল্প হইলো'। প্রথম লিখাখানি পাঠ করিয়া আবারো যাহা দৃষ্টির সম্মুখে পরিস্ফুটিত হইলো, তর্কবাচস্পতি মহাশয়কে পূর্বের পুস্তকে যথেষ্ট ধোলাই করিয়া মনস্তুতি লাভ না করিবার কারণবশতঃ ইহার অবতারণা। এক ভাইপোস্য ইহায় তাহার খুড় মশায়ের যেসব ত্রুটি বিদ্যাবাবুর দৃষ্টিগোচর হয় নাই, তাহা তুলিয়া ধরিয়া আরেকপ্রস্থ মার্জন করিলো তর্কবাচস্পতি খুড়া মহাশয়কে। বিদ্যাসাগর বাবু যে অতিশয় সহজ লোক ছিলেন নহে, ইহা বেশ করিয়া অক্ষিপটে ধরা দিতেছে।
তর্কবাচস্পতি মহাশয় আবারো উত্তর দিবার মতো দুঃসাহসিক কাজ করিয়াছিলেন দেখিয়া পুনরায় দ্বিতীয় পুস্তকখানির অবতারণা। যদিবা খুড় মহাশয়ের করুণ কাতরোক্তি ফুটিয়া উঠিয়া ছিলো, “ভাইপো মহাত্মার আমি কি অনিষ্ট করিয়াছি যে ইনি আমাকে এত কটু গালি প্রদান করিয়াছেন“। ইহা পাঠের দ্বারা কি আপনাদিগের মনে কম্পন ধরিতেছে না? মনে কি হইতেছে না, বেচারা নাহয় ভুল করিয়াছিলো এক্ষণে তাহাকে স্বস্তি দেওয়া, মুক্তি দেওয়া হোউক? কিন্তু না, ভাইপোস্য ছাড়িবার পাত্র নহেন। সোডা দিয়া তিনি আবারো কাচিলেন খুড় মহাশয়কে! তবে যাহাই হউক, ভাইপোস্য তথা বিদ্যাবাবু যে আসলেই জ্ঞানে অনন্য ইহা অস্বীকার করিলে পাতক হইতে হইবে।
পরবর্তী পুঁথি ব্রজবিলাস। ইহাও উপযুক্ত ভাইপো (ভাইপোস্য নহে) প্রণীত। ইহায় শ্রীযুক্ত ব্রজনাথ বিদ্যারত্ন ভট্টাচার্য্যকে কিঞ্চিত মার্জন করা হইয়াছে।
লেখকের উইটি লেখনিতে বেশ মজা পেয়েছি। তবে কিনা গল্পের খাতিরে জ্ঞান কপচানো হলেও কিছুটা বিরক্ত লাগছিলো।
হয়তো কাহিনীটা আরেকটু বড় হয়ে শাখা-প্রশাখা ছড়ালে, আরেকটু হাস্য-রসাত্মক হলে আরো ভালো লাগতো।
ফাইনাল মেসেজটা ভালো লাগে নি। ঠিক ধরেছেন আমারো এই পান খাওয়ার দরকার আছে।
মানুষ কেন আত্মহত্যা করে? সবকিছু পেয়ে গেলে নাকি কোন কিছুই না পাবার বেদনায়? আচ্ছা সব পাওয়া বা সব না পাওয়া কি আদৌ সম্ভব! আসলেই কি মৃত্যুর পূর্বমূহুর্তে সমস্ত জীবনটাই ফুটে ওঠে চোখের সামনে?
বইটা খুলে প্রথমেই যেটা চোখে বেঁধেছিলো তা হচ্ছে এটি শুরু হয়েছে অধ্যায় ১০ থেকে এবং পর্যায়ক্রমে কমতে কমতে শেষ হয়েছে অধ্যায় ১ এ এসে। স্বাভাবিকের বাইরে যা কিছু, সবই অস্বস্তি জাগায়, কিন্তু যখন বোঝা গেলো, এ আসলে ‘ম' এর ১০ তলার ওপর থেকে পতন তখন এটা স্বাভাবিকই হয়ে আসলো।
এটাকে কি ঠিক উপন্যাস বলা যায়? কেন যেন মনে হচ্ছিলো টুকরো টুকরো পেপার কাটিং পড়ছি। তবে হ্যাঁ, বেশ কিছু কবিতা পড়া হয়ে গেলো লেখকের বদান্যতায়। আর দশটা উপন্যাসের মতো এর নির্দিষ্ট কাহিনী বিন্যাস বা পরিণতি নেই।
ওহ না, আছে তো। ১০ তলার ওপর থেকে পতনটাই কাহিনী আর এর ফলে পরিণতি যে কী হবে তা তো কারো অজানা নয়।
তবে সরলরৈখিক পতনকে ছাপিয়ে গেছে ‘ম' এর মানসিক অবস্থা। টাইম ডাইলেশনের ফলে প্রতিটি তলাতেই ভিন্ন ভিন্ন অভিজ্ঞতার স্মৃতি রোমন্থন করছিলো ‘ম', সেই সাথে অন্য মানুষের এবং তার মস্তিষ্কের ভেতরটাও দেখা হয়ে যাচ্ছিলো। ভালো কথা অনেক জায়গাতেই ‘ম' হয়ে গেছে ‘মা' যা চরম বিরক্তির উদ্রেক ঘটিয়েছে।
তবে হ্যাঁ, মানুষ মাত্রই ভুলভাল। তারা জেনে না জেনে ফাঁদে পড়ে, হয়তো ফাঁদ থেকে বেরোতেও চায় কেউ পারে কেউ পারে না। আবার কেউ মায়ায় জড়িয়ে ফাঁদটাকেই করে ফেলে একান্তই আপন। মানুষের মনের কদর্যতা, ঈর্ষা, নীচতা, কাম এসব উঠে এসেছে সুচারুভাবে। ১০টি পরিবারের ১০টি কাহিনী ভিন্ন হলেও সবই এক সুতোতেই গাঁথা!
শেষ করার পরে কোন এক আবেশে যেন নিথর হয়ে থাকতে হয়।
বইয়ের কথা পরে হবে, এমনিতেই লেখকের লেখা ভালো লাগে, তার উপরে এই বইয়ের উৎসর্গ দেখেই লেখকরে নিজের লোক বলে মনে হচ্ছে।
অবশেষে তবে শেষ হলো সব! আচ্ছা আসলে কি শেষ হলো? আক্টোপাসের কি তাহলে শেষ ঘটলো নাকি অর্থ ক্ষমতার লোভে তা আবারো মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে অন্যভাবে?
আগেই বলেছি আমার সবথেকে ভালো লেগেছে দ্য লুনাটিককে। লেখক যেভাবে প্রতিটি চরিত্রকে গড়েছেন, যেভাবে খুব কমের ভিতরে তাদের জীবনকে তুলে ধরেছেন ওই ম্যানে ক্যারেক্টার বিল্ডআপ আরকি, সেই জিনিসটাও ভালো লেগেছে খুব। প্রায় সব মূল চরিত্র সম্পর্কেই জানিয়েছেন। তবে, অতীতের টাইমলাইনে আমার মতে সময় বেশি নষ্ট করেছেন, হয়তো বর্তমানের ঘটনা কম ছিলো বলে। কিন্তু তা বলে এমন নয় বর্তমান খাপছাড়া লেগেছে।
স্পাই থ্রিলার পড়লেও এই ক্রসিং জিনিসটা মেজাজ খারাপ করে দেয়, অথচ বাস্তবেও মূল এলিমেন্ট ওটাই।
ছোটখাটো বেশ কিছু বানান ভুল আছে সেগুলোকে ছাড় দেওয়াই যায়। কিন্তু তাই বলে একটা বাক্য শুরু করে তার মাঝে আরেকটা বাক্য শেষ করে আবার আগের বাক্যে ফিরে আসা! হোঁচট শুধু এতেই না, চরিত্রগুলোর কথাবার্তা অন্য চরিত্রের মুখ থেকেও বেরিয়েছে কিছুক্ষেত্রে। এসবে একটু যত্ন নেয়া উচিত ছিলো। আর ই-বই তো, চাইলেই তো ঠিক করে ফেলা যায়।
এবারে আসা যাক মূল কাহিনীতে, একবসায় পড়ে ফেলার মতো একটা লেখনী। প্লট, টুইস্ট, লেখার সাবলীলতা একটি গতিশীল কাহিনী উপহার দিয়েছে। কিভাবে একজন এক ধূর্ত পুলিশের সম্ভাব্য সকল ভাবনাকে আগেই ধরে নিয়ে নিজের কাজের টাইমলাইন বানিয়ে গিয়েছে, জিনিসটা অসাধারণ। চমক লাগলেও মূল সমাধানটা অনুমেয় ছিলো, যদিও যেভাবে কাহিনী এগিয়েছে, তাতে করে সেটাকে সযত্নে ঢেকে রাখা হয়েছে শেষ পর্যন্ত।
রুদ্র তালুকদার আর জিব্রান আহমেদকে নিয়ে আরো অভিযানের সঙ্গী হতে পারলে ভালো লাগবে। তবে এমনটা নয় যে দু'জনকে একসাথেই আসতে হবে। আলাদা আলাদা অভিযানের সঙ্গী নাহয় হলাম!
বিখ্যাত লোকের জীবনীপঞ্জির অংশ হলেও ২ তারা এর বেশি দেওয়া সম্ভব হলো না।
এর পিছনে কারণ অনেকগুলো। হয়তো মহৎ ব্যক্তিদের লেখনী পড়ার সময়ে এগুলো উপেক্ষা করাই যায়। কিন্তু পারলাম না।
ফরম্যাট করার পরে মনে হয় না কেউ চেক করে দেখেছে কী অবস্থা। এই একটা জিনিসই মেজাজ খারাপ করার জন্য যথেষ্ট (অন্তত আমার জন্য)। তারপরে ধরা যাক অনুবাদের কথা, হ্যাঁ, খাপছাড়া লেখা, মূল লেখা থেকেও হয়তো রস আস্বাদন সম্ভব না, কিন্তু অনুবাদ সম্ভবত জিনিসটাকে আরো বাজে করে দিয়েছে।
তবে যাই হোক ইনার সম্পর্কে আরো ভালোভাবে পড়তে হবে।
একটানা পড়ে ফেলার মতো একটা অসাধারণ বই! সাবলীল লেখনী আর কাহিনীর গতিময়তা কীভাবে যে টেনে নিয়ে যাবে শেষ পৃষ্ঠা পর্যন্ত আর সময় যে কীভাবে কেটে যাবে বোঝাই যাবে না।
প্রায় প্রতিটি চরিত্রেরই পিছনের কথা বলা আছে যা ছোট হলেও চরিত্রকে বুঝতে সাহায্য করে। আর কাহিনীতে এমন বুঁদ হয়ে ছিলাম যে টাইপোগুলোতে মেজাজ খারাপ করেও সময় নষ্ট আর করা হয়ে ওঠে নি। কিছু কিছু জায়গা লজিক্যালি চিন্তা করতে গেলে খটকা লাগা স্বাভাবিক, কিন্তু এসপিওনেজ থ্রিলার পড়তে এসে লজিকের দিব্যিই বা দিচ্ছে কে?
[b:সূর্যতামসী 62105121 সূর্যতামসী (বাংলাদেশ সংস্করণ) Kaushik Majumdar https://i.gr-assets.com/images/S/compressed.photo.goodreads.com/books/1661660296l/62105121.SY75.jpg 84509245] এর তুলনায় এটি বেশ ধীরগতির। তবে প্রথম বইতে অন্তত কিছু সমাধান তো হয়েছিলো!কিন্তু এ বই পরের খন্ডের জন্য মঞ্চ তৈরি ছাড়া আর কিছুই নয়। তবে হ্যাঁ, যেভাবে ‘জয়েন দ্য ডটস' খেলেছেন লেখক হ্যাটস অফ!ওহ, আর এ এডিশনের বাঁধাই সুবিধার ছিলো না অন্তত আমার কপিটার, শেষ ফর্মা প্রায় ঝুলে রয়েছে!