দুই বইব্যাপী যে জাল বিছানো হয়েছে, শেষখন্ডে সে জালে টান লাগতেই দেখাগেলো চুনোপুঁটি, রুই-কাতলা সবই আছে সেখানে। কোনো চরিত্রই ফেলনা নয়, যে নাম একবার হলেও এসেছে আগের বইগুলোয়, ধরে নিতে হবে সবই মিলেমিশে একাকার হবে এখানে।
এতো চরিত্র আর এতো কাহিনী-ইতিহাস কল্পনার মিশেলে আঁকার পরে তাতে আবার যথার্থ রঙ দিয়ে ফুটিয়ে তোলা কষ্টসাধ্য বিষয়! যেভাবে লেখক সবকিছু এক সুতোয় বেঁধেছেন, প্রশংসা না করে আর উপায় কই?
কিছু খটকা তো থাকবেই, হাজার হোক মানুষ তো দেব বা শয়তান তো আর নন!
বর্তমানে ঘটা খুনগুলোকে ছাপিয়ে যাওয়া অতীতই যে এই বইয়ের মূল উপজীব্য। এতে এতোটাই ডুবে ছিলাম যে ১০০ বছর আগের রহস্যের সমাধানেই মনে হয়েছিলো ঘটনা শেষ হয়ে গেছে, ভুলেই গিয়েছিলাম মূল রহস্য তো বর্তমানে। তবে শুধু অতীত থাকলেও খারাপ হতো না বরং বর্তমানে এসে পদে পদে হোঁচট খেতে হয়েছে। এসব শেষ করার আগের কথা, শেষে তো লেখক সব সুতোই ছেড়ে দিলেন।
এবং শেষে এসে যে আপারকাট লেখক ঝাড়লেন তব্দা খেয়ে বসে আছি এখন!
শুরু থেকেই বেশ কিছু জায়গা ছিলো খাপছাড়া। হুটহাট ফিলার ঢুকে এমন অবস্থা তৈরি করেছিলো, যা অতীত-বর্তমান নাকি ভবিষ্যৎ সেটা বোঝাটাই কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে। তাও নাহয় মেনে নেওয়া যায় কন্টিনিউটি ধরে। কিন্তু শেষে এসে যে কী করলেন লেখক সেটা বোধগম্য হলো না। যেন লিখা ছেড়ে উঠে আবার যখন লিখতে বসেছেন, যা মনে চাইছে তাই লিখছেন। কী যে ঘটছিলো, আর কেন ঘটছিলো তাল খুঁজে পেলাম না। সে তুলনায় অডিও ভার্সনটা বেশ গোছানো। আদতে এই বইয়ের সাথে পরিচয় ঘটেছিলোই ওটার কল্যাণে। কিন্তু তাও, জবাব না পাওয়া প্রশ্নের সংখ্যাটাও নেহায়েত কম নয়।
প্রথম ২০ পাতার মতো পড়তে গিয়ে মন এবং মেজাজ দুটোই খারাপ হচ্ছিলো। সেটা খটমটে বাক্য-বিন্যাস, ভুলে ভরা বানান এবং ইংরেজি শব্দের বহুল ব্যাবহার-এর সম্মিলিত প্রচেষ্টায়। তারও কিছু পরে গিয়ে লেখার বেশ পরিবর্তন ঘটে আর কাহিনী গতিময়তা পায়। মানুষ শয়তানের দাস? সে নিজে শয়তানকে ডেকে আনে? নাকি সে নিজেই আসলে সয়তান?বইয়ের শেষ দিকে এসে মনে হচ্ছিলো অনেকটা যেনো [b:ডার্কফল 24317554 ডার্কফল Dean Koontz https://i.gr-assets.com/images/S/compressed.photo.goodreads.com/books/1420532694l/24317554.SY75.jpg 3047309] এর মতো কাহিনী। তবে শেষ টুইস্টটা কোনোভাবেই আশা করি নি। অনেকটা যেনো [b:ফাইট ক্লাব 24832129 ফাইট ক্লাব Chuck Palahniuk https://i.gr-assets.com/images/S/compressed.photo.goodreads.com/books/1423074761l/24832129.SY75.jpg 68729] এর মতো টুইস্ট শুরুতে যা মনে হচ্ছিলো ২ তারার বেশি পাবে না, শেষে এসে মনে হচ্ছিলো ৫ তারাই দেই, কিন্তু পুরো বই ভর্তি বানানভুল, খানিকটা কষ্টসাধ্য লেখনি এবং বইয়ের বাইন্ডিং এর অবস্থা সুবিধার না হবার কারণে ৩ তারা দিতে ইচ্ছা হচ্ছিলো, কিন্তু শেষমেশ ৪ তারাই সই!
আগের বইতে টাইপোকে ধর্তব্যে আনি নাই দেখে কি টাইপো এমন দ্বিগুণ করে দেয়া লাগবে! এই বই পড়তে গিয়ে সিরিয়াসলি মেজাজ খারাপ হচ্ছে। ওয়েল, তারপরেও তিন তারা দিতে পারলাম না।ঠিক যেখানে শেষ হয়েছিলো [b:বাজিকর 34364317 বাজিকর Nabil Muhtasim https://i.gr-assets.com/images/S/compressed.photo.goodreads.com/books/1487674966l/34364317.SY75.jpg 55443718] সেখান থেকেই শুরু এর, অথবা বলা যায় ওই বইয়ের শুরু থেকেই এর শুরু। তারপর চিরায়ত স্পাই থ্রিলারের কাহিনী। এগিয়ে চলা লক্ষ্যের দিকে, প্রতিরোধের মুখে পরা তা ভেদ করে এগিয়ে যাওয়া, সাথে ফ্রী হিসেবে ক্রসিং, ডাবল ক্রসিং, ট্রিপল ক্রসিং তো থাকছেই।দেশিদের ভীড়ে আমার কিনা বেশি ভালো লাগলো দ্য লুনাটিককে!এখনো বাকি আছে অনেকটা পথ! অক্টোপাসের শুঁড় দিয়ে আঁকড়ে ধরা এ পৃথিবীকে কি পারবে কেউ তার কবল থেকে মুক্ত করতে? ওয়েল, পরের খণ্ড পড়ি, জানতে পারবো আশাকরি।
সাধু ভাষার এক আধখানা প্রবন্ধ বা গল্প হয়তো পড়া যায়, কিন্তু একটা সম্পূর্ণ বই যাতে আবার সংস্কৃতও উপস্থিত! অতি দুঃসাহসিক কাজ!
আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের প্রবন্ধ থেকে যে কয়জন লেখকদের সম্পর্কে জানতে পারি, কায়েস আহমেদ তাদের মাঝে একজন। মূলত তার সম্পর্কে করা উচ্ছ্বসিত প্রশংসার কারণেই আগ্রহ জন্মে লেখনীর সাথে পরিচিত হতে।
বইটির শুরু হয়েছে গল্পগ্রন্থ অন্ধ তীরন্দাজ দিয়ে। এর গল্পগুলো কেমন যেনো, অদ্ভুত-বিষন্ন-ছন্নছাড়া।
এরপর রয়েছে নির্বাসিত একজন উপন্যাস। স্বল্প পরিসরের এই উপন্যাসের বিস্তৃতি খোকার শৈশব থেকে যৌবন পর্যন্ত। কিন্তু এর যাত্রাপথও মসৃণ নয় বলেই মনে হয়েছে। নাম-উপন্যাসের সাথে রয়েছে একটি ছোট গল্প, যেটি নির্দেশ করে দেশের অস্থিরতাকে।
লাশকাটা ঘর গল্পগ্রন্থের গল্পগুলো যেন অনেকটাই পরিণত। প্রথম গল্প ‘পরাণ' পড়তে গিয়ে মনে হচ্ছিলো এটা অনায়াসে উপন্যাসে রূপ নিতে পারতো। ‘মহাকালের খাঁড়া' গল্পে অসাধু ব্যবসায়ী ভরত কোলের এবং তার লম্পট ছেলের ওপর ঘৃণা যতোটা না হয়, ভরত কোলের জন্যে মায়া হয় তার চেয়ে কিঞ্চিত বেশি। ‘দুই গায়কের গল্প' পড়তে গিয়ে ভ্রম হয়, এগুলো কি গল্প? নাকি চলমান একটি উপন্যাসের বিভিন্ন অধ্যায়! চরিত্র ও ঘটনাবলি অবাধে বিচরণ করে চলেছে এ গল্প থেকে সে গল্পে। নামগল্পটি নিত্যকার কলহ-জীবন-যাপনে যে সবাই লাশকাটা ঘরেরই বাসিন্দা তারই প্রকাশ। ‘গগনের চিকিৎসা তৎপরতা' গল্পে আমরা দেখা পাই গগনের, যে কিনা চাঁদের ঘা সারিয়ে তুলতে চায়। ‘মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পৈতৃক ভিটে ও মালপদিয়ার রমণী মুখুজ্জে' কি গল্প না স্মৃতিচারণ তা ধোঁয়াশা হয়ে আচ্ছন্ন করে রাখে। কখনো কখনো যে নিজদেশেই পরবাসী হয়ে থাকতে হয়, তা কেউ বরণ করে নেয় আবার কেউবা যে তা থেকে পালিয়ে বাঁচতে চায়; তারই প্রকাশ এতে। ‘নচিকেতাগণ'-র পটভূমি ১৯৭১, অন্যান্য গল্পের তুলনায় স্বল্প পরিসরের হলেও আঘাত হানে হৃদয়ের অনেক গভীরে।
‘নিরাশ্রিত অগ্নি' এবং ‘ফজর আলীর গল্প' এ দুটি হুবহু একই গল্প। এ কি ছাপাখানার ভূতের কাজ, না লেখকেরই রসিকতা কে জানে!
‘লাশকাটা ঘর'এর চরিত্র এবং কাহিনী ফিরে আসে দিনযাপন উপন্যাসে।
মোটের ওপরে আমার কাছে মোটামুটিই লেগেছে। বড্ড যেনো আগোছালো প্রতিনিয়তই যে নির্দিষ্ট গণ্ডির বাইরে যাবার প্রয়াস সেকারণেই মনে হয়।
Emile Gaboriau's detective is praised as the second best by Sir Arthur Conan Doyle himself. That tells about his writing. I listened to this audio story on YouTube. I loved it! I need to know this author more, who is known as the Poe of France.
কী যে হলো আর কেন যে হলো উদ্ধার করতে পারলাম না! জয়ন্ত-মানিক না হয়ে বিমল-কুমার হলে মনে হয় আরো বেশি উপভোগ করতে পারতাম।
উধাও হয়ে যাচ্ছে মেয়েরা! কবর থেকে উঠে আসছে ওরা কারা? ওরা বেঁচে আছে নাকি ওরা মৃত?
এসব প্রশ্নের জবাবের খুঁজেই ছুটেছে জয়ন্ত, সাথে আছে মানিক, সুন্দরবাবু এবং আরো অন্যরা।
প্রশ্নের সমাধান কি আদৌ মিললো? পড়েই দেখুন না।
প্রথম অর্ধেকে মনে হচ্ছিলো ঘটনা যে [b:আমি পিশাচ 36491585 আমি পিশাচ Anish Deb https://i.gr-assets.com/images/S/compressed.photo.goodreads.com/books/1509200218l/36491585.SY75.jpg 58205409] এর রূপান্তর শুধু চরিত্রগুলো মেয়ে, কিন্তু অর্ধেকের পর থেকে দেখা গেলো কাহিনী বাকিটা অনেকাংশেই আলাদা।
হতাশা কাটানোর জন্য পড়তে গিয়ে যখন আশেপাশের ঘটতে থাকা ঘটনার জন্য হতাশ হয়ে যাই! কিয়েক্টাবস্থা!
প্রতিনিয়তই সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো হতাশা আমাকে জর্জরিত করছে। (জি, এই বই পড়ার মাঝেও!) কিন্তু যখন এই বইটি নিয়ে বসছি, ক্ষণিকের জন্য হলেও হতাশাকে দূরে রাখতে পারছি। এমনকি পড়ার পরেও বেশ কিছুক্ষণ আসছে না সেসব অনুভূতি। কিন্তু পরে আবারো যা তাই অবস্থা।
মাত্রাতিরিক্ত টাইপো, সূচিপত্রে ছাপাখানার ভূত এসব না থাকলে উপভোগ্য হতো আরো অনেকটা।
মূল কথা একটাই, আপনার ঈমান যদি দৃঢ় হয়, আপনার তাকদীরে বিশ্বাসও তখন বেশি থাকবে, ফলে যাই আসুক, যাই ঘটুক আপনার সাথে আপনি কখনোই হতাশ হবেন না। এর স্বপক্ষে লেখক হাজির করেছেন কোরআনের আয়াত, রাসূলের হাদিস, বিভিন্ন ঘটনা।
ঝড়ের কারণে বিদ্যুৎ মশাই না থাকায় এক বসায় পড়ে শেষ করা গেলো এ আখ্যানটি। মহাকাব্যটি পড়া নেই, তার ওপরে এটি আবার কিশোর উপযোগী রূপান্তর। সুতরাং ধরে নিতেই পারছি অনেককিছুই হয়তো অনুপস্থিত। কিন্তু তাতে কী? এ আখ্যানের মূল চরিত্রেরা তো উপস্থিত।
গ্রীক বীর, ইথাকার রাজা অডিসিয়ুস এর কাহিনী এটি। সেই যে গেলেন ট্রয়ের যুদ্ধে, ট্রোজান হর্স বানিয়ে পরাজিত করে জয়ীর বেশে যার ফিরে আসার কথা ছিলো, দেবতাদের চক্রান্তে, দুর্ভাগ্যের কারণে তার যা কিছুর মধ্য দিয়ে অতিক্রম করতে হয়েছিলো সেটার বিবরণ আছে এ আখ্যানের প্রথমার্ধে।
পরের অর্ধে ফিরলেন তিনি নিজ দেশে। কিন্তু সেখানেও কি আর শান্তি আছে? চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র, দুধের মাছিতে সব পরিপূর্ন। সেখানে তার নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠা এই আখ্যানের দ্বিতীয়ার্ধের বিষয়।
কাহিনী গতিময়। অনুবাদও যথেষ্ট ভালো। তবে কয়েকটি টাইপো আছে। আবার কয়েকটি বাক্য আসত্তি হারিয়েছে। তা সত্ত্বেও উপভোগ্যই ছিলো।
এখন ইলিয়াড খুঁজে বের করে পড়তে হবে।
ঠিক জমলো না!
রকমারিতে পড়ে যা বুঝলাম এটা মূল উপন্যাসের একটা অতিসংক্ষিপ্ত প্রকাশ। তাও আবার মূল উপন্যাসের প্রথম ভাগের কাহিনীটুকুই শুধু।
ই-বইয়ের জন্যই অধ্যায়গুলোকে কেটেছেঁটে অতি সংক্ষিপ্ত করে আনা হয়েছে যার ফলে ঝড়ের গতিতে কাহিনী আগিয়েছে। সেকারণেই হয়তো লেখকের অন্য লেখার তুলনায় এই লেখা অতি দুর্বল ও অপরিণত বলে মনে হয়েছে।
লেখক নিজেই বইয়ের শেষে একগাদা প্রশ্ন দিয়ে বলে গেছে এসবের উত্তর পরের খণ্ডে। মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি হোক আর বইয়ের বিক্রির উদ্দেশ্যেই হোক, এমনটা না করেও কাজটা করা যেতো। প্রশ্ন সংখ্যা একটু বেশিই!
মূল ঘটনা যে কী, এখনো সেটা অধরা। অনেকগুলো খুন, অনেক ঘটনা, তার সাথে ততোধিক মানুষ! আবার বলা চলে থ্রিলার হলেও অনেকগুলো জনরাতেই উঁকি দিয়ে গেছে। এমনিতেই ইদানিং নন লিনিয়ার প্যারালাল বইগুলো খুব একটা আকর্ষণ করে না, তার ওপরে এ তো বহুমাত্রিক!
চরিত্র হারিয়ে ফেলি আমি পড়তে গেলে, এখানেও অজস্র চরিত্র আসছে টের পেয়ে ট্র্যাক রাখার চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু প্রফেসর স্যামুয়েল জনসনকে পেয়েছি বলে মনে পরছে না।
কী কারণে কিছু কিছু অসঙ্গত জিনিস মাত্র একটি করে অধ্যায়তেই এসেছে সেটিও বোঝা যাচ্ছে না। পড়ে দেখি পরের খণ্ড কী দাঁড়ায় কাহিনী। যদিও কাহিনী অনেক, কিন্তু লেখক তো বলেই দিয়েছে সব একসুতোয় গাঁথা।
লেখা খারাপ না, চলে। কথাবার্তায় আমরা যেমন বেশি সিরিয়াস হয়ে গেলে ইংরেজিতে বলি, তাও এখানে তুলে ধরা হয়েছে, কিন্তু মুখে তা মানালেও বইয়ের পাতায় কেমন যেন খাপছাড়া হয়ে চোখে ঠেকেছে। তবে অন্তত আমার ক্ষেত্রে, ২টা খণ্ড একসাথে কেনা না থাকলে কাহিনীর অন্তিম জানার জন্য পরের বইটা কিনতাম কিনা যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
আপনি যদি ক্ষমতাসম্পন্ন কোথাও নিজেকে বসাতে পারেন, তাহলে দেখতে পারবেন আপনার সৎ থাকা, ভালো থাকাটা কতোটা কষ্টের। প্রতি পদে পদে দেখবেন আপনার সবচেয়ে কাছের মানুষগুলোই আপনাকে প্ররোচিত করবে অসৎ হতে। একটা সময়ে হয়তো আপনিও হাল ছেড়ে গা ভাসিয়ে দেবেন জোয়ারে। মজার ব্যাপার হলো, যখন আর আপনি ভালো থাকবেন না, তখন সেই মানুষগুলোই আবার আপনাকে বলবে কেন আপনি ভালো নেই!
খুব ছোট একটি বই। শুরু যার জেলখানায়। চরিত্রের পরিধিও খুব বড় নয়। এসব চরিত্রের সাথে কিছুটা হয়তো আলাপ আছে, কিন্তু মূল ফোকাস সেই দুজনের ওপরেই, একজন বিসিএস ক্যাডার হওয়া পুলিশে চাকুরে আর একজন বিসিএসে ব্যর্থ বেকার। এদের চিনতে গিয়ে দেখতে পাবেন সমাজের অনেক না বলা কথা উঠে এসেছে। সমাজের কলুষতা আমরা সযত্নে এড়িয়ে যেতে চাই। আমরা প্রত্যেকেই একেকটি মেরুদণ্ডহীন কীটে পরিণত হয়েছি, যা আমরা হয়তো নিজেরাই টের পাই না।
নামকরণের স্বার্থকতা টের পাবেন শেষে গিয়েশেষটা অন্যরকম হতে পারতো!
ভারি ভারি শব্দ ব্যবহার করলেই তা ভালো লেখা হয়ে ওঠে না। লেখক যেহেতু ক্রিমিনোলজিতে পড়েছেন, সেসব জ্ঞানের প্রকাশ ঘটাতেই এসব ব্যবহার নাহয় মানা গেলো। বাংলাদেশের প্রথম মৌলিক ক্রাইম ফিকশন সিরিজ ‘ডিটেকটিভ সামু' এর ২য় খণ্ড এটি। অথচ আদতে এটি দ্বিতীয় খণ্ড নয় বরং প্রথম বই [b:বায়োডাটা 29912735 বায়োডাটা Bijup Souma https://s.gr-assets.com/assets/nophoto/book/50x75-a91bf249278a81aabab721ef782c4a74.png 50289769] থেকেই চলছে এ কাহিনী পরম্পরা। যেহেতু আগেরটা পড়ি নি, সেহেতু চরিত্র চিত্রায়ণের কোনো দোষই দিচ্ছি না।কিন্তু, খুব অল্পকিছু বই পড়া মানুষও যদি বই লিখতে যায় এভাবে তো লেখার কথা না! পুরো বই ডেস্ক্রিপ্টিভ ভাবে লেখা। ১০০ পাতার বইতে ডায়লগের অবতারণা আছে মাত্র ২টি! এভাবে একঘেয়ে ভাবে লেখাটা কি লেখকের দেখার সময়েও মনে আসে নি!!!এছাড়াও, লেখার মাঝে আছে অনেক অসঙ্গতি। সেসব নিয়ে আর কিছু বলছি না।কিছু কিছু বই পড়লে মনে হয় নেগেটিভ রেটিং দেয়া অথবা সময় এবং অর্থ ফেরত পাবার কোনো সিস্টেম থাকা দরকার ছিলো! এটিও সে গোত্রেরই। কোনো দরকারই নেই এই বই বা এই সিরিজ পড়ার!
বইটার প্রতি আগ্রহ জন্মেছিলো ডেস্ক্রিপশন বলেন আর ফ্ল্যাপে লেখা কথা বলেন তা দেখে। পড়া শুরু করেও হতাশ হইনি। লেখকের লেখার হাত চমৎকার। বইতেও খুব বেশি টাইপো নেই। কিন্তু যে আশা নিয়ে পড়া শুরু করেছিলাম, সে আশা পরিপূর্ণতা পায় নি সমাপ্তিতে। তবে যেভাবে শেষ হয়েছে সেটা আশাও করি নি, করা উচিত ছিলো।
লেখকের বাকি বইগুলোও পড়তে হবে।
৫ আগস্টের পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহের সুতো ধরে হাতে তুলে নিয়েছিলাম এই বই। তখন মনে হচ্ছিলো আসলেই কি আমার এই বাংলাদেশ চেয়েছিলাম? (আমি বাপু পুরোদস্তুর হতাশাবাদী)
পড়তে পড়তে দেখছিলাম এ অভাগা দেশটার কপালে আদৌ কখনোই সুখ ছিলো না।
শুরুটা হয়েছিলো অপারেশন ক্লিনহার্ট দিয়ে। সেখান থেকে চলে আসলো ‘৭১, আর একাত্তর মানেই মুজিব, তারপর জিয়া, এরশাদ, বিএনপি (+জামাত), আওয়ামি লিগ। কাউকে নিয়েই কথা বলতে বাঁধে নি তার। তবুও, কিছুটা যেন একপক্ষের ছোঁয়া রয়ে গেছে। তাতে করে আমার খুব করে জানতে ইচ্ছা করছিলো, এখন বেঁচে থাকলে তার কি আক্ষেপ হতো? নাকি এখনো সে সত্যিই বলতো?
তবে তার যে আক্ষেপ -
কিন্তু আমরা কি এই বাঙলাদেশ চেয়েছিলাম?এরই জন্যে বাঙলাদেশ চেয়েছিলাম?আমরা কি চেয়েছিলাম মুজিব হয়ে উঠবেন মহাএকনায়ক?আমরা কি চেয়েছিলাম ছোটো একনায়ক জিয়াকে?আমরা কি চেয়েছিলাম ভণ্ড একনায়ক এরশাদকে?আমরা কি চেয়েছিলাম একের পর এক অসামরিক ও সামরিক একনায়ক ও একনায়ক ও একনায়ক ও একনায়ক?
কেইগো হিগাশিনো বরাবরের মতোই দুর্দান্ত। কিন্তু বছরখানেক পরে এসেও যখন তার বই পড়ি, এবং দেখি ড্যান ব্রাউন যা করতো এও একই কাজ করে, কিছুটা বিরক্তি হয়।
তবুও, কাহিনী বুনন অসাধারণ। খুন, খুনী সবাইকে উন্মোচন করে দেওয়া প্রথম অর্ধেকেই তারপর ছুটে চলা সত্য উদ্ঘাটনের পেছনে। এবারে তো আরো একধাপ উপরে! মোটিভ! মোটিভ আসলে কী? যেটা মোটিভ হিসেবে ধরা দিচ্ছে সেটা কি আসলেও মোটিভ?
বানান ভুল তো আছেই, এই বইয়ের আরেকটি বিরক্তিকর দিক আমার কাছে মনে হয়েছে এটার লেখনী বর্ণনাত্মক। যা কিছু সংলাপ ছিলো, তা ওই প্রথম চতুর্ভাগেই, এরপর শুধুই বর্ণনা।
তারপরেও, কাহিনী হিসেবে অত্যন্ত উপভোগ্য এবং গতিময়, তাইতো প্রায় একটানা শেষ করে উঠেছি।
একটানে পড়ে ফেলার মতো একটা ছোট সুন্দর বই। কিন্তু বারবার টুইস্ট টুইস্ট খেলায় কিছুটা বিরক্তি লেগেছে।
জামান জামাল হয়ে গেছে এক জায়গায়। ছোট-খাটো কিছু কিছু টাইপোও রয়েছে।
বইয়ের প্রায় চারভাগের একভাগ পড়ে মনে হচ্ছে স্পিড রিডিং আমার জন্য না!
এমনিতেই প্রচুর ডিস্ট্রাক্টেড হয়ে থাকি, তার উপরে স্পিড রিড করতে গেলে স্পিড বা কম্প্রিহেনশন কোনটারই কোন খোঁজ পাওয়া যায় না।
তবে হ্যাঁ, নিজের মাতৃভাষায় জিনিসটা চেষ্টা করে দেখা যেতে পারে একবার।
সেল্ফ টেস্ট ১ এ স্পিড ছিলো ১৪৩ wpm আর কম্প্রিহেনশন ছিলো ৬০% সেটা সেল্ফটেস্ট ৭ এ হয়েছে ১৫৪ wpm আর ৮০%। উন্নতি হয়েছে কি?
তবে লেখকের ভাষ্যমতে ১০০০ wpm এ তো আমার উড়ে যাবার কথা ছিলো!
পিচ্চি একটা বই পড়তে এতোদিন লাগছে! তাহলেই বোঝা যায় আমার ডোপামিন কোথায় আছে!
কিন্তু সেটা ব্যাপার না, পড়তে গিয়ে যখন সামনে আসছে তোমার এখন এটা না করে ওটা করা উচিত টাইপের কথাবার্তা, আমারো তখন মনে হচ্ছে, আমার তো এখন এই বই পড়া বাদ দিয়ে অন্য কাজ করা উচিত! তাই বলে তো আর সেই কাজ করছি না।
ডোপামিনের কবল থেকে কতদূর কী রক্ষা পাবো তা তো জানি না। তবে এর অন্য বইগুলো পড়ার একটা আগ্রহ জন্মেছে। এটাকে লেখক হিসেবে তার সার্থকতাই তো বলা যায়, নাকি?
যারা এ জিনিস পড়ে কাজে লাগাতে পারবে, তাদের লাইফে একটা চেঞ্জ আসার পসিবিলিটি খুবই বেশি। আর নাহলে, শুধু পড়ার জন্য পড়া হলো আর self loathing নাহয় আরো কিছুটা বাড়লো।